বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন
পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি::
সবার হয় কিনা জানিনা। আমার হয়েছে। হয়েছে মানে একেবারে শৈশব থেকে। ভালভাবেই হয়েছে।
আমার জন্মের শহর সুনামগঞ্জ। পুর্ব পুরুষের সুনামগঞ্জ। জীবনের পঞ্চাশ পেরিয়ে সামনে পেছনে তাকালে দেখি নির্জলা অনুভুতির নাম সুনামগঞ্জ। নেশার মত।ছারতে পারিনি কখনো। যাইনি কোথাও।
নিজের জন্মস্থান নিয়ে সবার এমন হয় কি না জানিনা।আমার মত অনেকের হয়। অনেক বিখ্যাত মানুষেরও হয়।নিরিবিলি জীবনের মানুষেরও হয়। খুব বেশী স্থানে বেড়ানো হয়েছে এমন না। দেশের অনেকস্থানে গিয়েছি।বাইরের কয়েকটি দেশেও যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।অনেক সুন্দর স্থান দেখার ভাগ্য হয়েছে। সবকিছুর পরে সেই সুনামগঞ্জেই ভালোলাগা। কঠিন নেশার মত।
এক সময় আমার জন্মের শহর কবি জসিম উদ্দিনের ‘মায়া মমতাময় জড়াজড়ি করা’ ছিল। ছিল বলছি কারণ এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। পরিবর্তনের মধ্যেও আমার অস্তিত্বজুড়ে মায়া মমতায় জড়াজড়ি শহর রয়ে গেছে।
আমি কোন বিখ্যাত মানুষ নই। জগৎবিখ্যাত অনেক মানুষকে পড়েছি। দেশ, জন্মস্থানকেই উনারা ভালবেসেছিলেন গভীর মমতায়।
পৃথিবী ভ্রমণ করা ইবনে বতুতা ছিলেন মরক্কোর অধিবাসী। প্রথম যৌবনে পৃথিবী ভ্রমণে বের হয়ে মধ্যপ্রাচ্য, ভারত,দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন ভ্রমণ করে পরিণত বয়সে নিজ দেশে ফিরে যান। এর পর আবার বেরিয়ে যান মধ্য আফ্রিকার দেশগুলো ভ্রমণে। সব শেষ করে তিনি ফিরে আসেন মরক্কোতে।প্রায় আটশো বছর আগে তিনি ভ্রমণ করেছিলেন পঁচাত্তর হাজার মাইল।
অসংখ্য দেশ ভ্রমণের পর জীবনের শেষে এসে লেখা ভ্রমণবৃত্তান্তের সমাপ্তিতে লিখেছেন:
‘অসংখ্য সুন্দর, নয়নাভিরাম, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ দেশ আমি দেখেছি। কিন্তু আমার জন্মভুমির চেয়ে শ্রেষ্ট দেশ দেখিনি।’
আমি ক্ষুদ্র মানুষ। ক্ষুদ্র শহরেই আমার নেশা। ভালবাসা।এক সময় এক পরিবারের মত শহর হয়ত এখন নেই। কিন্তু সবাই মিলে যা কিছু অসংগতি সব দুর করা সম্ভব।পরস্পরের ভালোবাসায় সেই মায়া মমতায় জড়াজড়ি করা গ্রামীণ শহরে চলেন ফিরে যাই। অহমিকা, দম্ভ, অসুস্থ প্রতিযোগীতা বৃষ্টির ধারায় মুছে যাক।আমাদের ভালবাসার সুুনামগঞ্জে জড়াজড়ি করে থাকি। আনন্দময় জীবন হোক সবার।
১৮.০৮.২১
পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি